মাসুদ রানা : ১৯৭৯ সালের ১৪ জানুয়ারিতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ১১টি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের সমন্বয়ে তদারকি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গঠিত হয় দি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অফ বাংলাদেশ লিমিটেড ‘কালব’। পরবর্তীতে অন্যান্য ধর্মের এবং গোষ্ঠীকেও এর সদস্যপদ দেওয়া হয়। কালব বিগত সাড়ে চার দশকে সদস্যদের দারিদ্র বিমোচনে রিসোর্ট, এগ্রো প্রজেক্টসহ নানা উৎপাদনমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রয়েছে এর বিশালাকার নিজস্ব কার্যালয়ও। কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহলের থাবার কবলে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি হুমকী ও মিথ্যা প্রচারণার মুখে পড়েছে বারবার। আর এর মূল হোতা হচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের সম্প্রতি পদত্যাগকারী সেক্রেটারি আরিফ মিয়া। এ চক্রের অন্যান্যরা হলেন ভাইস-চেয়ারম্যান ফাহমিদা সুলতানা, পরিচালক মোঃ আরিফ হাসান, পরিচালক মোঃ আঃ মন্নান লোটাস, পরিচালক নোয়েল চার্লস গমেজ, পরিচালক মোঃ হেলালউদ্দিন ও আশীষ কুমার দাশ।
এ চক্রের বিরুদ্ধে ‘কালব’ রিসোর্ট এন্ড কনভেনশন হলের উন্নয়নের অর্থ আত্মসাৎ, জমি ক্রয়ের নামে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি, আবাসনের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, রিসোর্টের রুমভাড়া নিয়ে বিল পরিশোধ না করা, ‘কালব’ রিসোর্ট এন্ড কনভেনশন হলকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার এবং এর বারের লাইসেন্স বাবদ কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এই সাতজন সদস্য অত্যন্ত দূরভিসন্ধিমূলকভাবে চেয়ারম্যান মি. আগস্টিন পিউরীফিকেশনকে হেয় প্রতিপন্ন করতে ও ‘কালব’র মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক উন্নতির চাকাকে শ্লথ করার অপপ্রয়াস চালিয়েছেন। সূত্র আরো জানায় যে, মূলত প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য ব্যবহারে ব্যর্থ হয়ে তারা পদত্যাগ করেছেন।
এছাড়া ‘কালব’-এর এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিস কনসোর্টিয়াম প্রকল্পে বিনিয়োগের নামে অর্থ আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তাদের মেয়াদকালীন সময়ে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ না পাওয়ায় এবং উপরোক্ত দুর্নীতির বিষয়ে সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক সমবায় সমিতি আইন-২০০১ (সংশোধিত-২০০২ ও ২০১৩)-এর ৪৮ ধারার পরিদর্শন প্রতিবেদনের আলোকে একই আইনের ৪৯ ধারায় তদন্ত হলে সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রকাশ হয়ে যেতে পারে এমন আশংকা থেকে এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটির প্রতিবেদনে বিভিন্ন অনিয়ম উঠে আসা, ‘কালব’ কর্মকর্তা কর্তৃক সম্পাদিত তদন্ত কার্যক্রম উদঘাটিত, বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থলোপাটের বিষয়গুলো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই মূলত উপরে উল্লেখিত ব্যবস্থাপনা কমিটির ৭ (সাত) জন সদস্য পদত্যাগ করেন বলে সংশ্লিষ্টরা এ প্রতিবেদককে জানান।
অভিযোগ রয়েছে, পদত্যাগকারী সেক্রেটারি আরিফ মিয়া গং ও সহচররা নিজেদের মধ্যে যোগসাজসে কালবের সফট্ওয়ার সংক্রান্ত চুক্তিতে চরম অনিয়ম, ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে অনিয়ম, কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি, বিউটিফিকেশনের কাজ, পার্কিং, দেওয়াল ও ওয়াকওয়ে তৈরী, ওয়াশিংপ্ল্যান্ট, ইনডোর গেইমজোন, বেড, ম্যাট্রেস, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, ওয়াশিং মেশিনসহ নানা ক্ষেত্রের ক্রয়েও অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। এমনকি আরিফ মিয়া ‘কালব’ রিসোর্টে একটি সাজানো গোছানো রুম দিনের পর দিন নিজের নামে বরাদ্দ নিয়ে রাত্রিযাপন করতেন। যেখানে অবৈধ কর্মকাণ্ডও সংগঠিত হতো।
এই অসাধু চক্র নিজেদের অপকর্ম ধামাচাপা দিতে গিয়ে ‘কালব’র স্বনামধন্য চেয়ারম্যান মি. আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের চরিত্রে কালিমা লেপনের চেষ্টা করেছেন বারবার এবং এখনো সেই অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কিছুদিন আগে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়। নিউজে জনৈক মজিবুর রহমানের কাছ থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে জমি ক্রয়ের করেছেন বলে আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। অথচ ঘটনার সরেজমিন তদন্ত করে জানা যায়ি ঐ জমি ক্রয়ের সাথে আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের কোনো সম্পর্কই ছিলো না। পদত্যাগকারী সেক্রেটারী আরিফ মিয়া উল্লেখিত মজিবুর রহমানের সাথে জমি ক্রয়ের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। সেখানে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়ে থাকলে তার আরিফ মিয়ার উপরই বর্তাবে। কোনো অবস্থাতেই তা আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের উপর বর্তায় না।
একজন নিষ্ঠাবান কর্মবীর, ন্যায় পরায়ন ব্যক্তি আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের সম্মান ক্ষুণ্ণ করা ও তাঁকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যেই তারা তার বিরুদ্ধে এরূপ মিথ্যা ও বানোয়াট নিউজ প্রচার করার চেষ্টা করছে।
আগষ্টিন পিউরিফিকেশন মিথ্যা ও বানোয়াট নিউজের প্রতি কর্ণপাত না করে আসন্ন নির্বাচনে সৎ ও ন্যায়পরায়ন ব্যক্তিদের নির্বাচিত করে ‘কালব’র উন্নয়ন ও সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে সদস্যদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন।
আ/স/০৫/০২/২০২৫/আকাশ