পটুয়াখালীর আউলিয়াপুরে অবৈধ ট্রলির চাকায় গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা

নিজস্ব প্রতিবেদক : পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কে অবৈধ ট্রলি এবং ভারী ট্রাক চলাচল করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সকল সড়ক। বর্ষা মৌসুমের পূর্বেই শুরু হয়েছে জন ভোগান্তি।

জানা যায়, পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাদুরা ৮ নং ওয়ার্ডের গ্রামীন সড়ককে কেন্দ্র করে চলছে তরমুজ সংগ্রহ। ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠ থেকে গ্রামীণ সড়ক পথে অবৈধ ট্রলিতে করে তরমুজ পরিবহন করে এই এলাকায় নিয়ে আসা হয়। এখান থেকে ভারি যানবাহন ট্রাকে তরমুজ লোড করা হয়। ট্রাকটি এলাকার গ্রামীণ সড়কের অন্তত ১০ কিলোমিটার অতিক্রম করে মহাসড়ক ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যায়। গ্রামীণ মেঠো পথ ও পাকা রাস্তায় প্রতিদিন শতাধিক অবৈধ ট্রলি চলাফেরা করায় বছরে মাত্র তিন মাসের তরমুজ পরিবহনে পুরাই বেহাল দশা। বিভিন্ন স্থানে খালাখন্দসহ রাস্তার দু-পাশ ভেঙ্গে গিয়েছে। এদিকে ভারী ট্রাকের ২২ টনের অধিক যানবাহন চলাচলে গ্রামীণ সড়কের অধিকাংশ পাকা পিচ উঠে গেছে। বহিরাগত ও স্থানীয় তরমুজ ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে মিলন গুলজার, মনির হাওলাদার, মোতালেব মিয়া, জাহিদুল হাওলাদার সহ বেশ কয়েকজন। পরিবহন ও পরিবহনের সহায়তা করার জন্য স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বাহিনী রয়েছে। তাদের ভয়ে সাধারণ এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।

দক্ষিণ বাদুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, স্কুলের পাশে রাস্তাটি নিয়ে আমরা খুবই ঝুঁকিতে আছি। প্রতিদিন অসংখ্য ট্রলি চলাফেরা করায় রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। প্রায় সময় এখানে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। যানবাহন উল্টে খাদে পড়ে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাই ভারী যানবাহন যেন চলাচল না করে এবং সরকার যেন আমাদের রাস্তাটি সংস্কার করে দেয়।

আরও জানা যায়, সিন্ডিকেট বাহিনী স্থানীয় ও বহিরাগত তরমুজ ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে পরিবহন সুবিধা নিতে বাধ্য করছে। এদের মধ্যে আউলিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম সিকদার, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হাওলাদার, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কবির হাওলাদার সহ বেশ কয়েকজন। এরা ফ্যাসিবাদী আমলে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তরমুজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় এবং তারাই ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহনের দায়িত্ব নিয়ে থাকে।

স্থানীয় মসজিদের এক মুয়াজ্জিন মুখলেসুর রহমান বলেন, আপনারাই দেখেন রাস্তা তো নাই বললেই চলে। এখানে হাই স্কুল, প্রাইমারি স্কুল, জুমা মসজিদ ও জৈনপুরের খানকা রয়েছে। সরকারের কাছে আবেদন যেন রাস্তাটি পুনরায় ঠিক করে দেয়।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন’র প্রত্যাহারের দাবিতে পটুয়াখালীতে ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ কর্মসূচি

পটুয়াখালীর আউলিয়াপুরে অবৈধ ট্রলির চাকায় গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা

Update Time : ০৪:৩৬:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কে অবৈধ ট্রলি এবং ভারী ট্রাক চলাচল করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সকল সড়ক। বর্ষা মৌসুমের পূর্বেই শুরু হয়েছে জন ভোগান্তি।

জানা যায়, পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাদুরা ৮ নং ওয়ার্ডের গ্রামীন সড়ককে কেন্দ্র করে চলছে তরমুজ সংগ্রহ। ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠ থেকে গ্রামীণ সড়ক পথে অবৈধ ট্রলিতে করে তরমুজ পরিবহন করে এই এলাকায় নিয়ে আসা হয়। এখান থেকে ভারি যানবাহন ট্রাকে তরমুজ লোড করা হয়। ট্রাকটি এলাকার গ্রামীণ সড়কের অন্তত ১০ কিলোমিটার অতিক্রম করে মহাসড়ক ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যায়। গ্রামীণ মেঠো পথ ও পাকা রাস্তায় প্রতিদিন শতাধিক অবৈধ ট্রলি চলাফেরা করায় বছরে মাত্র তিন মাসের তরমুজ পরিবহনে পুরাই বেহাল দশা। বিভিন্ন স্থানে খালাখন্দসহ রাস্তার দু-পাশ ভেঙ্গে গিয়েছে। এদিকে ভারী ট্রাকের ২২ টনের অধিক যানবাহন চলাচলে গ্রামীণ সড়কের অধিকাংশ পাকা পিচ উঠে গেছে। বহিরাগত ও স্থানীয় তরমুজ ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে মিলন গুলজার, মনির হাওলাদার, মোতালেব মিয়া, জাহিদুল হাওলাদার সহ বেশ কয়েকজন। পরিবহন ও পরিবহনের সহায়তা করার জন্য স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বাহিনী রয়েছে। তাদের ভয়ে সাধারণ এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।

দক্ষিণ বাদুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, স্কুলের পাশে রাস্তাটি নিয়ে আমরা খুবই ঝুঁকিতে আছি। প্রতিদিন অসংখ্য ট্রলি চলাফেরা করায় রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। প্রায় সময় এখানে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। যানবাহন উল্টে খাদে পড়ে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাই ভারী যানবাহন যেন চলাচল না করে এবং সরকার যেন আমাদের রাস্তাটি সংস্কার করে দেয়।

আরও জানা যায়, সিন্ডিকেট বাহিনী স্থানীয় ও বহিরাগত তরমুজ ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে পরিবহন সুবিধা নিতে বাধ্য করছে। এদের মধ্যে আউলিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম সিকদার, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হাওলাদার, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কবির হাওলাদার সহ বেশ কয়েকজন। এরা ফ্যাসিবাদী আমলে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তরমুজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় এবং তারাই ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহনের দায়িত্ব নিয়ে থাকে।

স্থানীয় মসজিদের এক মুয়াজ্জিন মুখলেসুর রহমান বলেন, আপনারাই দেখেন রাস্তা তো নাই বললেই চলে। এখানে হাই স্কুল, প্রাইমারি স্কুল, জুমা মসজিদ ও জৈনপুরের খানকা রয়েছে। সরকারের কাছে আবেদন যেন রাস্তাটি পুনরায় ঠিক করে দেয়।