নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করায়, প্রথম স্ত্রীর জিজ্ঞাসার জেরে শ্বশুর কর্তৃক প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে পুত্রবধূ মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার হন। পটুয়াখালীর মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর টোলপ্লাজার অদূরে মহাসড়কের থ্রি পয়েন্ট নামক স্থানে রাস্তায় ফেলে পুত্রবধূকে মারধর ও লাঞ্ছনা করার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর আহসান হাবিব ও স্থানীয় কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে । এ সময় পুত্রবধূর সাথে থাকা তার বড়ভাই ফরিদ ইসলাম কেও হাতুড়ি দিয়ে মেরে চোখের নিচে মারাত্মক জখম করেন এবং মাফিয়ার আরেক ভাই রিয়াজ উদ্দিন কেও মারধর করেন।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে আটটার পর আলীপুর থ্রি পয়েন্ট নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতে মাফিয়া আক্তার বাদী হয়ে মহিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ৪ বছর পূর্বে আলীপুর এলাকার বাসিন্দা আহসান হাবিবের ছেলে ওমর ফারুক নাবিলের সাথে একই এলাকার মৃত্যু আনোয়ার হোসেনের মেয়ে মাফিয়া আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গভীর সম্পর্কের এক পর্যায়ে গত বছর অক্টোবর মাসে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং বিয়ের পরে তারা ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন।
কিছুদিন পর নাবিল ঢাকা থেকে নিজ এলাকা আলীপুরে চলে আসেন এবং স্ত্রী মাফিয়ার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এবং ঢাকাতে স্ত্রীর নিকট ফিরে যাননি। এমতাবস্থায় স্ত্রী মাফিয়া স্বামীর কোনো খোঁজ না পেয়ে , বিভিন্ন মাধ্যমে স্বামীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে স্বীয় এলাকা আলীপুরে চলে আসেন।
স্বামী তার অগোচরে অন্যত্র বিয়ে করেন এই সংবাদ পেয়ে স্ত্রী মাফিয়া তার বড় ভাই ফরিদ ও রিয়াজ কে সাথে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার পথে আলীপুর থ্রি পয়েন্ট নামক স্থানে পৌঁছালে তার স্বামী নাবিলের সাথে দেখা হয়ে যায়। স্বামী নাবিলের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতে চাইলে নাবিল উহা অস্বীকার করেন। পরে স্বামী নাবিলের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি মাফিয়া তার শ্বশুর কে জানালে কয়েক মিনিটের মধ্যে নাবিলের বাবার নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন যুবকদের নিয়ে আহসান হাবীব তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আহসান হাবীব পুত্রবধূ মাফিয়া কে রাস্তার উপর ফেলে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন। এমনকি খুন জখমের ভয় দেখালে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান আহসান হাবীব সহ কয়েকজন যুবক ফরিদ নামের এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করেন এবং বিবাহ সংক্রান্ত বিষয়ে শোরগোল করেন ।
এ বিষয়ে মাফিয়ার বড় ভাই ফরিদ বলেন, আমার বোন মাফিয়া এবং ওমর ফারুক নাবিলের ৪ মাস আগে ঢাকাতে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর নাবিল আমার বোনের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় এবং পরে জানতে পারি সে এলাকায় চলে এসেছে। আজ আমার বোন জানতে পারে নাবিল অন্য জায়গায় দ্বিতীয় বিয়ে করে। খবর পেয়ে আমাকে এবং আমার ছোট ভাইকে নিয়ে নাবিলের বাড়িতে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে আমাদের সাথে দেখা হওয়ার পর কথা বলার এক পর্যায়ে আমার বোন মাফিয়া ও আমাদের মারধর শুরু করেন। নাবিলের বাবা ও কয়েকজন যুবক সহ হাতুড়ি দিয়ে মেরে আমার মাথায় এবং চোখের নিচে মারাত্মক আঘাত করেন।
মহিপুর থানা সূত্রে জানা গেছে , এ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে পরবর্তীতে অনুসন্ধান পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আ/স/০৮/০২/২০২৫/আকাশ